সুন্দর! সে তো পাহাড়। পাহাড়ের রূপ, নির্জনতা আর সৌন্দর্য নিয়ে তারিফের কমতি নেই। কিন্তু পাহাড়ে পর্যটক স্পটের সৌন্দর্যের পাশাপাশি থাকার জায়গাও জরুরি।
নির্জনে সুনসান নীরবতা, হরেক রকমের পাখির কলকাকলি এবং নানা প্রজাতির সবুজ গাছগাছালিতে ভরপুর পাহাড় প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে উপভোগের একটি আদর্শ জায়গা। একটু শান্তিতে থাকার অবকাশ খুঁজে নিতে ভ্রমণ পিপাসুরা ভিড় জমান পাহাড়ে।
প্রান্তিকলেক
প্রান্তিকলেক এমনই এক স্থান। জায়গাটির পরিচালনায় রয়েছে জেলা প্রশাসন। বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের হলুদিয়া-ভাগ্যকুল সড়কে পাহাড় আর অরণ্যে-ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় প্রান্তিকলেক পর্যটন স্পটের আয়তন ৬৫ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এগারো বছর আগে ২০১৩ সালে সরকার এটিকে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে। এখানে রয়েছে প্রায় ২৫ একর আয়তনের প্রাকৃতিক জলাশয় বা পাহাড়ি লেক।
বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালিতে ভরপুর লেকের চারপাশ। উন্মুক্ত মঞ্চ, পিকনিক স্পট, বিশ্রামাগার, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, নেপাল থেকে আমদানি করা ট্রি-টপ অ্যাডভেঞ্চার, জিপ-লাইন ট্রলি (জিপলাইনার), কিডস কর্নার ছাড়াও লেকের জলে ঘুরে বেড়াতে পর্যটকদের জন্য সৌরবিদ্যুৎ-চালিত সুন্দর বোট রয়েছে।
প্রান্তিকলেক
আবার জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এখানে লেকে মাছ শিকারের ব্যবস্থাও রয়েছে। এ ব্যাপারেও জেলা প্রশাসন যথেষ্ট আন্তরিক। লেকের পাড়ে রাতে তাবু টাঙ্গিয়ে ক্যাম্পিংয়ের জন্য এটি আদর্শ জায়গা। সবুজ পাহাড় আর গাছগাছালিতে ভরপুর শুনশান নীরবতা ও নীল জলের প্রান্তিকলেক স্পটটি সত্যিই অসাধারণ। আধুনিক একটি রেস্টুরেন্ট ও হলুদিয়া থেকে প্রান্তিকলেক যাবার আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা থাকলে স্পটটি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন আরও কাজ করছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, বৈচিত্র্যময় একটি জেলা বান্দরবন। পর্যটন শিল্পের বিকাশে প্রান্তিকলেক পর্যটন স্পটটি আরও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হচ্ছে। ভ্রমণপিপাসুদের সুবিধার্থে এখানে নেপাল থেকে আমদানি করা অ্যাডভেঞ্চার ট্রি-টপ, জিপ-লাইন ট্রলি (জিপলাইনার) এবং শিশুদের জন্য কিডস কর্নার করা হয়েছে। ফলে এখানে সবাই উপভোগ করতে পারবেন। প্রকৃতির নির্মল বাতাস, পাখির কিচিরমিচির আওয়াজে প্রাণ জুড়ানো স্থানটি পিকনিক ও যে কোনো অনুষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত একটি দর্শনীয় স্পট।
প্রান্তিকলেক
প্রান্তিকলেকে প্রবেশ মূল্য
জনপ্রতি ২০ টাকায় টিকেট কেটে প্রান্তিকলেক পর্যটন স্পট ভ্রমণ করতে হবে। স্পটের ভেতরে লেকে নৌকা ভ্রমণ এবং অন্যান্য রাইটের জন্য আলাদা অর্থ গুণতে হবে।
কীভাবে যাবেন
বান্দরবন-চট্টগ্রাম সড়কের হলুদিয়া বাজার। ওখানে নেমে সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত টমটমে করে যেতে পারবেন প্রান্তিকলেক। রিজার্ভ সিএনজিতে ভাড়া পড়বে দুইশ থেকে ৩শ টাকা। যে কোনো রিজার্ভ গাড়ি বা প্রাইভেট গাড়িতে করে বান্দরবন জেলা শহর থেকে যাওয়া যাবে। এখানে ক্যাম্পিং করতে চাইলে ডিসি অফিস থেকে আগেই অনুমতি নিতে হবে।
প্রান্তিকলেক
কোথায় থাকবেন
প্রান্তিকলেক এ রাত্রি যাপনের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। জেলা প্রশাসন এখনও সে ব্যবস্থা করতে পারেনি তবে শীঘ্রই করবে বলে জানা গেছে। আশপাশে খাবারের কোনো ভালো রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থা নেই। তাই আপনাকে দিনের মধ্যে গিয়ে সন্ধ্যার আগেই ফিরে আসতে হবে।